মিলন হোসেন বেনাপোল,
বেনাপোল বন্দরে অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধে এবার ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছে সরকার। বন্দরের অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার পাশাপাশি কাজ করবে উপজেলা পরিষদের এই দুই ম্যাজিস্ট্রেট।
বৃহস্পতিবার ১৬ অক্টোবর যশোর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আজাহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠির আদেশে স্থায়ী নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত অস্থায়ীভিত্তিতে দুজনকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।নিয়োগ প্রাপ্তরা হলেন: শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. কাজী নাজিব হাসান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নিয়াজ মাখদুম।
নিয়োগপত্র সূত্রে জানা গেছে, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক বেনাপোল স্থলবন্দরের ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। স্থায়ীভাবে ম্যাজিস্ট্রেট পদায়নের আগ পর্যন্ত (১৬ অক্টোবর) থেকে বেনাপোল স্থলবন্দরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং অপরাধ প্রতিরোধ কার্যক্রমকে কার্যকর করার লক্ষে যশোরের বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশক্রমে অস্থায়ীভাবে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বেনাপোল বন্দরে প্রথম থেকেই নানান অনিয়ম ও রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। তবে ৫ আগস্টের পর এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী বেনাপোল বন্দর থেকে শুল্কফাঁকি দিয়ে আমদানি পণ্য পাচার আরও বাড়িয়েছে।
অনিয়ম বন্ধ করতে বন্দরে ৩টি নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৩ শতাধিক নিরাপত্তা কর্মী রয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও অনিয়ম রোধে ব্যর্থতা। ফলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় শৃঙ্খলা রক্ষার আবেদন জানালে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়।
তথ্য বলছে, গত ২২ সেপ্টেম্বর রাতে বন্দর এলাকা থেকে একটি ভারতীয় ট্রাকের পণ্য গোপনে আরেকটি বাংলাদেশি ট্রাকে লোড করা হয়। পরে ঢাকাগামী পণ্যবাহী ট্রাক ঢাকা মেট্রো-ট-২২-৭৫৬৬ বেনাপোল বন্দরের বাইপাস সড়কের ওপর থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবি আটক করে। ট্রাকটি বেনাপোল বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে তল্লাশি করে ১ হাজার ৪৭৬ পিস শাড়ি, ২১৫ পিস থ্রি-পিস, মোটরসাইকেলের দুটি টায়ার, ১০ হাজার ৬৯৩ পিস ওষুধ, ৭৪ হাজার ৪৫৫ পিস কসমেটিক্স ক্রিম জব্দ করা হয়। এসব পণ্যের বাজারমূল্য প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ ৬১ হাজার ৯৩০ টাকা। গত ২৩ সেপ্টেম্বরে কাগজপত্র ছাড়া এক ভারতীয় পণ্য বোঝায় ট্রাক আটক হয়। তাছাড়া বন্দর এলাকায় বিজিবি কর্তৃক প্রতিনিয়ত চোরাচালান পণ্য জব্দ হচ্ছে।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, বেনাপোল বন্দরে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধে বেনাপোল স্থলবন্দরের ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত গঠিত কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়ায় নড়ে চড়ে বসেছে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও কর্মকর্তারা। যেকোনো অপরাধ কর্মকাণ্ডে বিচারকার্য সহজ ও বিধি অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নিতে এই সিদ্ধান্ত নেয় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ উল্লেখযোগ্য ভাবে কাজ করবে বন্দরে।
ব্যবসায়ীরা জানান, বেনাপোল বন্দরে অনিয়ম ও দুর্নীতিরোধে ম্যাজিস্ট্রিট নিয়োগে বৈধ ব্যবসায়ীরা খুশি হয়েছেন। বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন রেজা জানান, অবৈধ ও চোরাচালানরোধে সরাসরি ম্যাজিস্ট্রিটি ক্ষমতা বাস্তবায়ন হবে। বন্দরের ভেতরে চুরি, বহিরাগত প্রবেশ ও কাগজপত্রবিহীন পণ্য প্রবেশরোধে বন্দরের নিরাপত্তা কর্মীদের পাশাপাশি কার্যকারী ভূমিকা পালন করবে ম্যাজিস্ট্রেট।
প্রেরক
মিলন হোসেন বেনাপোল
তারিখ ১৭/১০/২০২৫
মোবাইল ০১৭১২২১৭১৪৩
আপনার মতামত লিখুন :